কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে মালগাড়ি ধাক্কা মেরেছে। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ জন আহত। সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মৃত পরিবার পিছু ২ লক্ষ্য টাকা ও আহত পরিবার পিছু ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা দেন | সোমবার সকালে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। তার মাঝেই ঘটল এই দুর্ঘটনা। অসমের শিলচর থেকে শিয়ালদহের দিকে আসছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সিগন্যাল লাল থাকায় নীচবাড়ি এবং রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে দাঁড়িয়েছিল ট্রেনটি। তখন সেই লাইনেই এসে পড়ে একটি মালগাড়ি। সজোরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে ধাক্কা মারে সেটি। খেলনাগাড়ির মতো মালগাড়ির উপর উঠে পড়ে এক্সপ্রেসের পিছনের একাধিক বগি। লাইচ্যুত হয় মালগাড়িও। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? রেলের প্রাথমিক অনুমান, লাল সিগন্যাল দেখতে পাননি মালগাড়ির চালক। সেই কারণেই একই লাইনে এসে যায় সেটি। সাধারণত যে লাইনে এক্সপ্রেস ট্রেন চলে, সেই লাইনে মালগাড়ি চালানো হয় না। মালগাড়িকে দাঁড় করিয়ে পাস করানো হয় এক্সপ্রেস। এ ক্ষেত্রে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনেই ছিল মালগাড়িটি। একই লাইনেই দু’টি ট্রেন পাস করানোর পরিকল্পনা ছিল রেলের। তবে আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা করিয়ে দিয়ে তার পর মালগাড়িকে পাস করানোর কথা। সেই কারণেই মালগাড়িকে লাল সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। রেলের অনুমান, মালগাড়ির চালক ওই সিগন্যাল দেখতে পাননি। ফলে একই লাইনে এসে পড়ে মালগাড়িটি। ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। এ ক্ষেত্রে আরও একটি প্রশ্ন প্রকাশ্যে আসছে। এখন যে কোনও রেল ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকে। ইঞ্জিনের সামনে নির্দিষ্ট কোনও দূরত্বে যদি কোনও ট্রেন বা অন্য কিছু থাকে, তবে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ওই ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়বে। একে ‘কবজ’ বলা হয়। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে মালগাড়ির ইঞ্জিনে কি সেই ব্যবস্থা ছিল না? রেল সূত্রে খবর, পুরো ঘটনার উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করে দেখা হবে। প্রথম কাজ সফল ভাবে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করা। ঘটনাস্থল থেকে দার্জিলিং পুলিশের অ্যাডিশনাল এসপি অভিষেক রায় বলেন, ‘‘কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে মালগাড়ি ধাক্কা মেরেছে। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ জন আহত। সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’’ ২০২৩ সালের ২ জুন। ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কথা এখনও স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি। সেই দুর্ঘটনার পর একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলে। তদন্ত করে সিবিআইও। উঠে আসে রেলকর্মীর গাফিলতি এবং সিগন্যাল বিভ্রাটের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ঠিক এক বছর পর আবারও একই রকম দুর্ঘটনা ঘটল। এ বার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সেই একই প্রশ্ন আবারও মাথাচাড়া দিল। কী ভাবে ঘটল এত বড় দুর্ঘটনা? যান্ত্রিক গোলযোগ না কি সিগন্যাল বিভ্রাট? না কি আবারও গাফিলতিই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কারণ?