প্রায়ই তো বাজারের ব্যাগ ভর্তি করে কুমড়ো কিনে আনেন। তারপর এই সবজিকে রসাল করে রেঁধে গলাধঃকরণ করেন। কিন্তু কখনও কুমড়োর পাতা খেয়েছেন কি? উত্তর যদি না হয়, তাহলে কিন্তু বড় ভুল করছেন। কারণ জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, আপনার অবহেলার শিকার হওয়া এই পাতাতেই রয়েছে খনিজ এবং ভিটামিনের ভাণ্ডার। তাই সুস্থ থাকতে আজ থেকেই কুমড়ো পাতা খাওয়া চালু করুন। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কুমড়োর পাতায় রয়েছে ক্যালশিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ-এর মতো একাধিক জরুরি খনিজ ও ভিটামিন। তাই নিয়মিত এই পাতা ডায়েটে রাখলে যে রোগবিরেত কাছে আসার সুযোগ পাবে না, তা তো বলাই বাহুল্য। তাই আর দেরি না করে চটজলদি এই পাতার কয়েকটি অবাক করা গুণ সম্পর্কে জেনে নিন। আশা করছি, এই প্রতিবেদনটি পড়ার পর আপনারও এই পাতা সম্পর্কে যাবতীয় ধারণা বদলে যাবে। ১. হার্টের বন্ধু এখন কম বয়সেই হার্টের অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এমনকী বয়স মাত্র ৩০-এর গণ্ডি পেরনোর পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। তাই যেন তেন প্রকারেণ হার্টের অসুখ প্রতিরোধ করতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কুমড়ো পাতা। আসলে এই পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সলিউবল ফাইবার। আর এই উপাদান রক্তে উপস্থিত কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলতঃ হার্ট থাকে সুস্থ। ২. হাড় হবে শক্তপোক্ত হাড়ের জোর বাড়াতে চাইলে আপনাকে রোজের ডায়েটে কুমড়ো পাতা রাখতেই হবে। আসলে এই পাতায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস। আর এই দুই উপাদান কিন্তু হাড়ের জোর বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগের ফাঁদ থেকে দূরে থাকতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত কুমড়ো পাতার তরকারি খান। এতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে। ৩. কোলোন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করবে শেষ কয়েক দশকে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে বিরাট বদল এসেছে। ফল, শাক, সবজির মতো হেলদি খাবার ছেড়ে আমরা বিরিয়ানি, মোমো, কাবাবে মন দিয়েছি। আর এর ফল ভুগছে শরীর। এমনকী এই কারণে কোলোন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। তবে সুখবর হল, নিয়মিত কুমড়ো পাতার পদ পাতে থাকলে কোলোন ক্যানসারের মতো ঘাতক অসুখের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা কমবে। আসলে এই পাতায় উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে ফাইবার অন্ত্রের হাল ফেরায়। ফলে কর্কটরোগে আক্রান্ত হওয়ার হ্রাস পায়। ৪. ইমিউনিটি হবে চাঙ্গা আমাদের চারাপাশে রয়েছে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের সাজানো ঘর, বাড়ি। আর একটু সুযোগ দিলেই এইসব জীবাণু আমাদের শরীরের উপর আক্রমণ শানায়। এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা বারবার করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেন। আর এই কাজটিতে আপনার সহযোদ্ধা হতে পারে কুমড়ো পাতা। আসলে এই পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি মজুত রয়েছে যা কিনা ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করবে। ৫. ত্বকের হিতকারী ত্বকের খেয়াল রাখতে চাইলে নিয়মিত কুমড়ো পাতার তরকারি খেতে হবে বৈকি! আসলে এই পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। আর এই ভিটামিন কিন্তু ত্বকে উপস্থিত ক্ষতিকারক পদার্থকে শরীরের বাইরে বের করে দিতে পারে। ফলে ব্রণ, ব়্যাশ এবং বলিরেখার ফাঁদ কাটিয়ে ত্বক দেখায় উজ্জ্বল। তাই ত্বকের স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে রোজ কুমড়ো পাতা ডায়েটে রাখুন। Disclaimer: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।