,‘অমর একুশে বইমেলা'-য় কিছুদিন আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল জান্নাতুন নাঈম প্রীতির লেখা বই জন্ম ও যোনির ইতিহাস। পাশাপাশি সম্প্রতি মোস্তফা সরয়ার ফারুকির পরিচালনায় তৈরি একটি ছবি ‘শনিবার বিকেল’-কেও মুক্তির অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই ঘটনাগুলি নিয়ে যখন বাংলাদেশ তোলপাড় সেই সময় প্রতিবাদের এক অভিনব ভাষা বেছে নিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের পড়ুয়ারা। তাঁরা ১৯ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি ভাস্কর্য তৈরি করেছিলেন। যেখানে পেরেকবিদ্ধ 'গীতাঞ্জলি' হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। একইসঙ্গে রবি ঠাকুরের মুখে লাগানো ছিল টেপ। পড়ুয়াদের দাবি ছিল 'মুক্ত কণ্ঠ রোধ' করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই তাঁরা এই প্রতিবাদ করছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলার মাঝেই ‘গায়েব’ হয়ে যায় ভাস্কর্যটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী জানিয়েছিলেন, এই ধরনের একটি ভাস্কর্য তৈরি করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই অপমান করা হয়েছে। এই ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। রাতের অন্ধকারে তা স্থাপন করা হয়েছিল। এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঢেউ ওঠে। এরপরেই তা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তিনি। এদিকে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার পর বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন বহু মুক্তমনা ভ্লগার। এই ভাস্কর্য স্থাপন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিমু কুম্ভকার 'কালের কণ্ঠ'-কে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাকস্বাধীনতাকে সমর্থন করে না। এই ভাস্কর্যটি সরানো তাঁদের দালালির নামান্তর। তাই আমরা এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে ফের তা স্থাপন করছি। হাতে সেই ছুরি-বিদ্ধ গীতাঞ্জলি গায়েব। রবি মূর্তির মুখে যে টেপ বসানো হয়েছিল তাও নেই। অবয়বের অর্ধেকাংশই অস্তিত্বহীন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে ফিরে এসেছে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য। কিন্তু, বদলে গিয়েছে অবয়ব। শুক্রবার বিকেলে ওই ভাস্কর্যটি পুনরায় স্থাপন করা হয়। কিন্তু, তার পাশে লাল-সাদা ব্যানারে বড় বড় করে লেখা হয় কিছু প্রতিবাদের ভাষা। "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং সকল ধরনের সেন্সরশিপ বন্ধ কর" এবং ‘তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলে থাকি", লাল কালিতে লেখা এই প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে রীতিমতো আলোচনা চলছে দুই বাংলায় বুদ্ধিজীবী মহলেই।